দেশে এতো এতো CSE স্টুডেন্ট থাকার পরেও Non-CSE এর স্টুডেন্ট কিভাবে প্রোগ্রামিং সেক্টরে ঢুকে যায়?
দেশে এতো এতো CSE স্টুডেন্ট থাকার পরেও Non-CSE এর স্টুডেন্ট কিভাবে প্রোগ্রামিং সেক্টরে ঢুকে যায়? এইটার পাঁচটা কারণ আছে
১. বেশিরভাগ কোম্পানি চাকরির জন্য যেসব স্কিল, টেকনোলজি বা ফ্রেমওয়ার্ক খোঁজে তার অনেক কিছু CSE এর কারিকুলাম এ নাই। আর যে কয়েকটা আছে সেগুলাও কিছু CSE এর পোলাপান আছে ঠিক মতো শিখে না। অর্থাৎ কমন CSE স্টুডেন্টদের (ভালো স্টুডেন্ট বাদ দিয়ে বাকি যার আছে) তাদের স্কিল আর জব মার্কেটের কমন ডিমান্ড এর মধ্যে একটা গ্যাপ আছে।
২. প্রোগ্রামিং শেখার প্রচুর রাস্তা বের হয়ে গেছে। যেমন, ইউটিউব খুবই হাই কোয়ালিটি রিসোর্চ আছে। অনেক অর্গানাইজড ওয়েবসাইট আছে, ব্লগ ওয়েবসাইট, বুটক্যাম্প, বই তো অভাব নাই। ফেইসবুক, লিংকডইন এ রিসোর্চ শেয়ার হয়। এইসব দেখে CSE স্টুডেন্টদের সাথে সাথে দুই-চারজন চাল্লু Non-CSE ঢুকে গিয়ে তাদের স্কিল প্রমাণ করে জব-ইন্টার্ন ম্যানেজ করে ফেলছে। আর সেইটা দেখে আরো Non-CSE ধীরে ধীরে CSE এর ফিল্ডে হানা দেয়ার চেষ্টা করতেছে।
৩. ২০-৩০% প্রোগ্রামিং রিলেটেড জব এর জন্য CSE মাস্ট লাগবে, ফ্যাকাল্টি, রিসার্চার, সরকারি চাকরি, ইত্যাদি। আবার কিছু কিছু কোম্পানির স্পেসিফিক চাকরির জন্য CSE চায়। বাকি ৫০% এর মতো জব সার্ককুলার এ ডিগ্রি এর কথা বলা থাকে না। জাস্ট স্কিল এর কথা বলা থাকে। এমনকি বড় বড় টেক জায়ান্টগুলাও ডিগ্রির চাইতে স্কিল এর দিকে ফোকাস দেয়ায় কিছু Non-CSE ঢুকে পড়তেছে।
৪. প্রোগ্রামিং হিরো এর মাসে মাসে যে ১০০-১৫০ স্টুডেন্ট জব-ইন্টার্ন পাচ্ছে সেখানেও আমরা দেখতেছি ৩০-৪০% নন-CSE এর স্টুডেন্ট জব/ইন্টার্ন পাচ্ছে।
৫. আরেকটা খুচরা দোষ-- CSE এর হর্তাকর্তারা উদার। উনারা ডাক্তার, নার্স, আইনজীবী, ইত্যাদি প্রফেশন এর মতো স্ট্রিক্ট থাকে নাই। প্রফেশনাল হওয়ার জন্য: ডিগ্রি লাগবে বা স্পেশাল লাইসেন্স বা পারমিশন লাগবে এমন কোন রুলস সেট করে নাই। তাই CSE এর ফিল্ড অনেকটা ওপেন ফিল্ড টাইপের হয়ে গেছে।
----
এইটুক পড়ে: CSE স্টুডেন্টদের মনে হতে পারে-- হায় হায়। তাইলে কি CSE পড়ার দরকার নাই। ডিগ্রির দরকার নাই। (এইভাবে মোটেও চিন্তা করা যাবে না। CSE ডিগ্রির অবশ্যই ভ্যালু আছে। একজন ভালোভাবে শেখা CSE ফাউন্ডেশন এর অনেক ভ্যালু আছে। অনেক অনেক বেশি অপরচুনিটি পাবে।)
---
[ পার্ট-২ ]
এতোই যদি সুযোগ থাকে তাহলে যে কেউ কি নন-CSE ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে প্রোগ্রামিং এর জগতে এসে কোপায় ফেলতে পারবে?
উত্তর: না। দুনিয়ার সবাই সব কিছু করতে পারবে। এমনভাবে চিন্তা করা যাবে না। প্লাস, যে যেই ফিল্ডে আছে তার জন্য তার ফিল্ডে ভালো করার সুযোগ অবশ্যই আছে। সেটা অবশ্যই চেষ্টা করা উচিত। এর পরেও কেউ যদি প্রোগ্রামিং সেক্টর ট্রাই করতে চায় সেটা তার সিদ্ধান্ত। আমি কাউকে এনকারেজও করি না আবার ডিসকারেজও করি না।
তবে এইটা বলি-- তুমি যদি সিরিয়াসলি ট্রাই করতে চাও। তাহলে ট্র্যাক চেইঞ্জ করার আগে মাথায় রাইখো: যেই সেক্টরে যেতে চাও সেই সেক্টর সম্পর্কে তোমার আগ্রহ আছে কিনা। সেখানে কি শেখায় তুমি জানো কিনা। সেগুলা শিখতে তুমি চাও কিনা। এবং সেটা শিখতে গিয়ে কোন চ্যালেঞ্জ চলে আসলে: সেই চ্যালেঞ্জ ফেইস করার ধৈর্য্য তোমার আছে কিনা। তুমি কিভাবে শিখবে। প্রতিদিন কিভাবে এফোর্ট দিবে সেটার ডিসিশন নেয়া আছে কিনা। এর পাশাপাশি: ঠিক মতো এফোর্ট না দিলে বা লাক ফেভার না করলে তুমি ব্যর্থও হতে পারো। সেটাও কিন্তু মাথায় রাখতে হবে।
---
[ পার্ট -৩ ]
Non-CSE ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে প্রোগ্রামিং ফিল্ডে চলে আসতে গেলে শর্টটার্মে এবং লংটার্মে কি কি চ্যালেঞ্জ ফেইস করতে হবে?
১. CSE এর ফিল্ডে CSE স্টুডেন্টদের প্রায়রিটি বেশি থাকবেই। এইটা মানতেই হবে।
২. CSE স্টুডেন্টরা যত সুযোগ পাবে, তার সব সুযোগ তুমি পাবে না। হয়তো ৫০-৭০% জবে এপ্লাই করতে পারবে। সবগুলাতে পারবে না।
৩. CSE স্টুডেন্টরা একাডেমিক পড়ালেখার কারণে এক্সট্রা কিছু জিনিস জানে। ফাউন্ডেশন ভালো। এইগুলা শেখার জন্য তোমাকে সময় দিতে হবে।
৪. প্রোগ্রামিং সেক্টরে ফোকাস করলেও কিন্তু তোমার একাডেমিক পড়াও কিন্তু চালিয়ে যেতে হবে। গ্রাজুয়েশন মাষ্ট ফিনিশ করতে হবে।
৫. CSE স্টুডেন্টদের শেখার জন্য একটা এনভায়রনমেন্ট আছে। একটা ফ্রেন্ডসার্কেল, ফ্যাকাল্টি, এলামনাই, এমন নেটওয়ার্ক আছে। Non-CSE রা এমনটা একাডেমিকভাবে পাবে না। এইটা তাদের নিজেদের ম্যানেজ করতে হবে বা 'প্রোগ্রামিং হিরো' এর মতো লার্নিং প্লাটফর্ম এ থেকে নিতে হবে।
---
[ পার্ট-৪ ]
এইসব চ্যালেঞ্জ ওভারকাম করার উপায় কি?
তুমি যদি প্রোগ্রামিং ফিল্ডে আসার কথা চিন্তা করো। বাস্তবতা মেনে নিয়েই চিন্তা করতে হবে। কম সুযোগ পেলেও, যতটুকু সুযোগ পাবে সেটাই ১০০% কাজে লাগবে। সেই মাইন্ডসেট নিয়ে আসতে হবে। মনের ভিতরে কনফিউশন থাকবেই। সেটা নিয়েই চেষ্টা করতে হবে। আর কোনভাবেই একদিনে কোর টেকনোলজি শিখে আবার ফাউন্ডেশন শিখে সব উড়ায় ফেলবো। তিন-চার মাসে ফুলস্ট্যাক ডেভেলপার হয়ে যাবো এমন আকাশ কুসুম চিন্তা করা যাবে না।
ধাপে ধাপে চিন্তা করতে হবে। আগে একটা রাস্তা ঠিক করবো। তারপর সেই অনুসারে একটা ছোট খাটো জব/ইন্টার্ন পর্যন্ত যাবো। তারপর জব/ইন্টার্ন এর পাশাপাশি আরো শিখবো। ফাউন্ডেশন স্ট্রং করার চেষ্টা করবো।
.
নিজে নিজে শিখতে পারলে ভালো। এতে কষ্ট অনেক বেশি হয়। সময় অনেক বেশি লাগে। আর যদি কোন একটা গাইডেড এনভায়রনমেন্ট থেকে শিখে নিজেকে জব/ইন্টার্ন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে চাও। তাহলে জুনের ২৪ তারিখের এর মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ো web. programming-hero .com তে। কি আছে জীবনে।
[ পার্ট-৫]
ভালো একটা ক্যারিয়ার শুরু করতে কত দিন সময় লাগতে পারে?
নিজে নিজে শিখতে গেলে দেড়-দুই বছর লেগে যাতে পারে। আর প্রোগ্রামিং হিরো এর মতো একটা গাইডেড এনভায়রনমেন্ট এ সুপার সিরিয়াস থাকতে পারলে, কারো কারো মেইন জিনিস শিখতে ৬ মাস। তারপর জব/ইন্টার্ন পেতে আরো ৩-৬ মাস লেগে যেতে পারে।
আবার কেউ একটু ঢিলা হলে বা ফাঁকিবাজি করলে তার আরো বেশি সময় লাগবে। আর খুব বেশি ঢিলা বা অনিয়মিত হলে তার কোনদিনও হবে। সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
---
ফাইনালি, একটা স্কিল ডেভেলপ করা। ভালো ক্যারিয়ার সেট করা। লাইফে মিনিংফুল কিছু করার জন্য CSE এবং Non-CSE কারো জন্যই সহজ না। দুই গ্রূপকেই কষ্ট করতে হয়। হয়তো কেউ একাডেমিক থেকে বেনিফিট পায় আর কেউ পায়না। তবে জীবন কারো জন্যই সহজ না।
This blog written by Jhankar Mahbub, Follow him : https://www.facebook.com/JhankarMahbub